শান্তিপুরে আগমেশ্বরী কালীপুজো: তিনশ বছরের ঐতিহ্য

post

শান্তিপুর:সম্পা জানা

শান্তিপুরের আগমেশ্বরী কালীপুজো শুরু হয় চক্ষুদানের মাধ্যমে। তিনশ বছর ধরে চলে আসা এই প্রথায় ভক্তরা মাতৃ মূর্তিকে সোনার অলংকারে শোভিত করেন। প্রাচীনকালে সার্বভৌম আগমবাগীশ, যিনি পণ্ডিত কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশের প্রপৌত্র, শান্তিপুরে এই পুজোর সূচনা করেন। তিনি ছিলেন একজন তন্ত্রসাধক এবং আগমশাস্ত্রজ্ঞ।শোনা যায়, সেই সময় শাক্ত বৈষ্ণবদের মধ্যে বিরোধ চলছিল, যা সমাধানের জন্য মথুরেশ গোস্বামী তাঁর কন্যার বিবাহ দেন সার্বভৌম আগমবাগীশের সাথে। কিন্তু পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠলে মথুরেশ গোস্বামী শান্তিপুরে চলে আসেন। তিনি একটি পঞ্চমূণ্ডির আসন স্থাপন করে দেন তাঁর জামাতার তন্ত্রচর্চার জন্য। সেখানেই সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেন সার্বভৌম আগমবাগীশ।মায়ের নির্দেশে গঙ্গা থেকে মাটি নিয়ে এসে মূর্তি নির্মাণের পর পুজো করেন। এই প্রাচীন প্রথা আজও বজায় রয়েছে। বর্তমানেও আগমেশ্বরী মাতা পুজো সমিতি এই পুজোর আয়োজন করে। মায়ের ভোগে দক্ষিণা কালী রূপে পূজিত হন দেবী আগমেশ্বরী, যার জন্য বড় গোস্বামী বাড়ির গৃহবধূরা নিরামিষ পদে ভোগ প্রস্তুত করেন। প্রায় ১৩ ফুট উচ্চতার মাতৃ মূর্তি পুজোর দিন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তদের আকৃষ্ট করে। বিসর্জনের সময় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়, যাতে মাতৃ মূর্তি অন্ধকারে বিচরণ করতে পারে। দু'দিনের অপেক্ষা, এরপরই শুরু হবে মাতৃ আরাধনা।

You might also like!