যে পথে কৈলাশ ফিরে যায় উমা,৫০০ বছর ধরে চলছে সেই গ্রামে পূজো।

post

জলপাইগুড়ি:সম্পা জানা

উত্তরের মা দুর্গার আরেক রূপ হল ভাণ্ডানী ৷ ময়নাগুড়ি ব্লকের বার্নিশ গ্রামে ৫০০ বছর ধরে একাদশীর দিন পূজিত হয়ে আসছেন ভাণ্ডানী রূপে উমা।একাদশীর দিনে দেবী দুর্গা বার্নিশ গ্রামে পূজিত হন মা ভাণ্ডানী রূপে । একদিন কৃষকরা তাঁদের সুখ-সমৃদ্ধির জন্য পুজো করে থাকেন মাকে । মর্তে পূজিত হওয়ার পর উমা পাড়ি দেন কৈলাসে ৷ ঘরে ফিরে যাওয়ার সময় মা পূজিত হন কৃষকদের হাতে । চারিদিকে যখন বিষাদের আবহ, তখন উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার বার্নিশ গ্রামে শোনা যায় ঢাকের আওয়াজ আর বোধনের সুর । জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি বার্নিশ এলাকায় দেখা মেলে এই দৃশ্য ৷ এখানে মায়ের মূর্তির সঙ্গে মহিষাসুর থাকে না । পাশাপাশি মা দুর্গার বাহন হিসেবে সিংহ নয়, মা ভাণ্ডানীর বাহন হিসেবে দেখা যায় বাঘকে । বার্নিশ গ্রাম ছাড়াও জেলার বেশ কিছু অন্য গ্রামেও সমৃদ্ধির দেবী ভাণ্ডানীর পুজোকে ঘিরে ফের উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে ৷শুধু রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষই নয়, বর্তমানে ভাণ্ডানী পুজোকে ঘিরে উৎসবে মেতে ওঠে গ্রাম বাংলার  মানুষজন । কথিত আছে, দেবী দুর্গার অপর এক রূপ ভাণ্ডানীকে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ বনাঞ্চলের বাসিন্দারা পুজো করেন 'বনদুর্গা রূপে' । উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চলেও তাই দেবী দুর্গার বিসর্জনের পর এক উৎসবের শেষে আরেক উৎসব শুরু হয় । কথিত আছে, বিসর্জনের পর বাপের বাড়ি থেকে এই বার্নিশ গ্রাম দিয়ে কৈলাসে যাচ্ছিলেন দেবী দুর্গা ৷ সেই সময় এলাকার কৃষকরা মা দুর্গাকে একরাত তাদের গ্রামে থেকে যেতে বলেন ৷ কারণ গ্রামে প্রচণ্ড অভাব-অনটন । তখন মা দুর্গা তাদের অনুরোধ রাখেন এবং এই বার্নিশ গ্রামে একরাত কাটিয়ে যান ৷ একাদশীর দিন গ্রামের মানুষের কাছ থেকে পুজো নিয়ে কৈলাসের পথে রওনা দেন উমা ।এই প্রাচীণ পুজো প্রসঙ্গে পুজো কমিটির সহ সভাপতি দীনেশ চন্দ্র রায় বলেন, কৈলাসে ফিরে যাবার সময় এই গ্রামের মানুষ মায়ের কাছে আবেদন করেন ভান্ডানি রূপে পুজো গ্রহণ করার,সেই সময় ধর্তিমোহন মল্লিকের বাড়ীতে দেবীকে প্রতিষ্ঠা করেন সেই থেকে আজ পাঁচ পুরুষ ধরে চলে আসছে পুজো ও মেলা।

You might also like!