মায়ের হেঁসেল বন্ধ,পুজোর আগে বিপাকে আধপেটা মানুষেরা

post

আনন্দ বাংলা অনলাইন ডেস্ক: পুজোর মুখে বন্ধ 'মা' ক্যান্টিন । মাত্র পাঁচ টাকার কুপন কেটে দুপুরে পেট পুরে খাবার দিন শেষ এবার দুর্গাপুরের । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুপুরে পেট পুরে খাবারের ব্যাবস্থার জন্য মা ক্যান্টিন শুরু করেছিলেন গোটা বাংলায়। দুর্গাপুরেও সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা স্বশাসিত সংস্থা আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের তত্ত্বাবধানে বেসরকারি এজেন্সিকে দিয়ে এই পরিষেবা শুরু হয়েছিল দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে আর শহর দুর্গাপুরের প্রাণকেন্দ্র সিটি সেন্টার বাস স্ট্যান্ডে। আগে আসার অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রতিদিন সকালে একশো জনকে এই পাঁচ টাকার কুপন দেওয়া হতো। কুপন দেখিয়ে ভাত ডাল ডিম সবজি পেতো পেট পুড়ে খেতে পারতো সাধারণ পথ চলতি মানুষও । গত ২০২৩ সালের ২৯ শে মার্চ আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ টেন্ডার প্রক্রিয়াতে অদিতি এন্টারপ্রাইজ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা মা ক্যান্টিনের টেন্ডার পায় , ধাপে ধাপে এই সংস্থার টেন্ডার এক্সটেনশন করে দিয়ে বেশ ভালোই চলছিল মুখ্যমন্ত্রীর স্বাদের এই মা ক্যান্টিন প্রকল্প। কিন্তু বেসরকারি এই সংস্থার কর্ণধার শান্তুনু মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, আচমকা আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান কবি দত্ত ফোন করে তাকে জানিয়ে দেন মা ক্যান্টিন বন্ধ করতে হবে , আচমকা এই সিদ্ধান্ত কেন এই প্রশ্নের উত্তর জানতে এরপর তারা পর্ষদ অফিসে গেলে সেখানেও পর্ষদ এর তিন আধিকারিক কাজ বন্ধ করার জন্য একই কথা বলেন। বেসরকারি সংস্থার কর্ণধার শান্তুনু মুখোপাধ্যায়ের প্রশ্ন যখন আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ সরকারি পোর্টালের মাধ্যমে তাদেরকে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় সামিল করেছিল তাহলে সেই কাজ বন্ধ করার জন্য লিখিত নির্দেশ বা মেল না করে, ফোন করে মা ক্যান্টিন আচমকা বন্ধ করার নির্দেশ দিতে গেলো কেন পর্ষদ চেয়ারম্যান কবি দত্ত ? বেসরকারি এই সংস্থার কর্ণধারের দাবি এইবারও মা ক্যান্টিনের টেন্ডারের জন্য প্রসেস শুরু হয়েছে, বেশ কয়েকটি সংস্থা সেই টেন্ডার প্রক্রিয়াতে অংশ নিয়েছেন, চলতি মাসেই তার নিস্পত্তি হওয়ার কথা, তার আগে এমন হটকারী সিদ্ধান্তে তো বিপদের মুখে পড়ে গেলো এই গরিব মানুষজনরা, সরকারি প্রকল্পে, নতুন টেন্ডার যিনি পাবেন তার কাজ শুরুর আগেই আচমকা তাকে ফোন করে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিতে গেলেন আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ চেয়ারম্যান কবি দত্ত?সেই প্রশ্নও তুলেছেন বেসরকারি সংস্থার কর্ণধার শান্তুনু মুখোপাধ্যায়।তাহলে কি এর পেছনে অন্য কাউকে কিছু পাইয়ে দেওয়ার কিছু আছে সন্দেহ প্রকাশ করেন বেসরকারি এই সংস্থার আধিকারিক শান্তুনু মুখোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের বিরুদ্ধে খামখেয়ালিপনার অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মেল মারফত লিখিত অভিযোগ করেছেন শান্তুনু । উত্তরে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান কবি দত্তের জবাব, সব অভিযোগ ভিত্তিহীন, মা ক্যান্টিনের টেন্ডার নিয়ে কিছু জানা নেই তার, তবে পর্ষদের পক্ষে আর মা ক্যান্টিনের তত্ত্বাবধান করা সম্ভব নয়, যদি দুর্গাপুর নগর নিগম চায় তাহলে তারা নিজেদের নজরদারিতে মা ক্যান্টিন চালু রাখুক, তারা আসানসোল দুর্গাপুর শহরের উন্নয়নের কাজে মন দিতে চান আরো বেশী করে সেটাও সংস্থার আইন মেনেই পাল্টা দাবি কবি দত্তর ।আকাশ থেকে উড়ে আসেনি আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা এডিডিএ , ভুলে গেলে চলবে না এটাও একটা সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা স্বসাষিত একটি সংস্থা,গরিব মানুষের স্বার্থে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প এইভাবে বন্ধ করে দেওয়া যায়না আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদকে কড়া বার্তা দিলেন জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়, প্রয়োজনে তিনি সংস্থার চেয়ারম্যান কবি দত্তর সাথে আলোচনায় বসবেন বলে জানান। মহালয়ার পূর্ণলগ্নে পিতৃপক্ষের অবসানে মা উমার যখন আগমনী বার্তা আকাশে বাতাসে, ঠিক তখন মায়ের আগমনী বার্তার আবহে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের তত্ত্বাবধানে চলা দুর্গাপুরের দুটি জায়গায় থাকা মা ক্যান্টিন থেকে হাত গুটিয়ে নেওয়ার কথা বলাতে রাতের ঘুম উড়েছে এদের, যারা ভিক্ষাবৃত্তি করে, অন্যের বাগানে কাজ করে, বা দিন আনা দিন খাওয়া করে পাঁচ টাকার একটা কুপন কেটে দুপুরে পেট পুড়ে একটু খাবার খাওয়ার সুযোগ পেতেন এই মা ক্যান্টিনের মাধ্যমে, বুঝে উঠতে পারছেন না কি করবেন এরপর। দুর্গাপুরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রকল্প এইভাবে মুখ থুবড়ে পড়াতে একযোগে শাসক দল ও বাংলার সরকারকে দুসেছে বিরোধীরা। তাহলে গরিব অসহায় সাধারণ মানুষের স্বার্থে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প মা ক্যান্টিনের ভবিষৎ এখন কোন পথে হাটবে দুর্গাপুরে?

You might also like!